বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা-১০ (লালমাই-নাঙ্গলকোট) আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, দেশের মানুষ অতীতে আ.লীগের শাসন দেখেছে, বিএনপির শাসন দেখেছে, জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছে। এবার নতুন করে তারা জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দিবো- এ স্লোগান আর চলবে না। কারণ, ভোট একটি আমানত। আপনার এই আমানত বা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর ওই নির্বাচিত প্রতিনিধি যদি খুন করে কিংবা জনগণের চাল, ডাল, ডিম চুরি করে তাহলে সেই দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে। তাই সৎ, যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থী দেখে ভোট দিতে হবে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকালে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার হরিশ্চর ইউনিয়ন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পেরুল উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমরা সবার জন্য একটি বাসযোগ্য রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মুসলমানদের মসজিদ যদি পাহারা দেয়া না লাগে তাহলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানদের উপসনালয়ও পাহারা দেয়া লাগবে না। সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়, জন্মগত অধিকার নিয়ে আমরা এ সমাজে বসবাস করবো। এ দেশে দখলদারি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, টাকা দিয়ে ভোট কেনার নির্বাচন, দলীয় মনোনয়নের নামে হত্যা, গুম, খুনের নির্বাচন থেকে উত্তরণের জন্য জামায়াতে ইসলামী জাতির সামনে পিআর পদ্ধতি উপস্থাপন করেছে।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণের একটি ভোটেরও মূল্যায়ন করা হবে। আমাদের প্রতিপক্ষ বন্ধুরা জনগণকে বোঝাতে চায় চৌদ্দগ্রামে ভোট দিলে এমপি নাকি হবে কুড়িগ্রামে। পিআরের এমন পদ্ধতিও আছে যেখানে জেলাভিত্তিক পিআর হতে পারে। পিআরের নিয়ম হচ্ছে জাতির সামনে আপনাকে আসনের তালিকা এবং কোন কোন প্রার্থী হবে সেই তালিকা ঝুলিয়ে দিতে হবে। গোটা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা থেকে সমসংখ্যক ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রার্থী এমপি হিসেবে সংসদে পাঠাবে। প্রতিপক্ষের লোকেরা বলে পিআর মাথায় দেয় নাকি গায়ে মাখে তারা জানে না।
বিশ্বের ৯১টি রাষ্ট্রে পিআর পদ্ধতি ব্যবস্থা রয়েছে। যারা পিআর নিয়ে জনগণকে বোকা বানাতে চায় তারা জনগণের কল্যাণ চায় না। বরং তারা নিজেদের আখের গোছাতে চায়।
বিগত ১৬ বছরে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিটি নেতাকর্মী শত জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েও একটি আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রয়াস থেকে থেমে যায়নি। আমরা আশা করেছিলাম ৫ আগস্টের পর দেশবাসী একটি নতুন বাংলাদেশের চিত্র দেখতে পাবে। দেশ থেকে দুর্বৃত্তায়ন, চাঁদাবাজি, টেন্ডাবাজি ও মাদকের কারবার দূরীভূত হবে। কিন্তু আমরা আশাহতভাবে লক্ষ করলাম, ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজির পরিবর্তন হয়নি। শুধু হাত বদল হয়েছে। দেশের একটিমাত্র দল জামায়াতে ইসলামী, যারা কোনো চাঁদাবাজিতে সম্পৃক্ত হয়নি।
এ সময় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও কুমিল্লা-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ড. একেএম সৈয়দ সরোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী।